বেশির ভাগ ফেসবুক ব্যবহারকারীই তাঁর অ্যাকাউন্টের নিরাপত্তা নিয়ে যথেষ্ট সচেতন নন। কিছু বিষয়ে একটু সচেতন থাকলে ফেসবুক আইডি রাখা যায় নিরাপদ।
নাম
আপনার ফেসবুক আইডির নিরাপত্তার প্রথম ধাপ হলো আইডির নাম। ফেসবুক আইডিতে ব্যবহার করা নাম যদি আপনার পাসপোর্ট, জাতীয় পরিচয়পত্র বা ড্রাইভিং লাইসেন্সে ব্যবহার করা নামের সঙ্গে মিল না থাকে, তাহলে আইডিটি নিরাপদ নয়। কখনোই ‘এঞ্জেল ফারিয়া’, ‘সেদিন দুজনে’, ‘রকস্টার বয় সিয়াম’, ‘নীল নীলাঞ্জনা’—এ ধরনের নাম ব্যবহার করবেন না। নামে বিশেষ ফন্ট বা ক্যারেক্টার ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকুন। চেষ্টা করুন জাতীয় পরিচয়পত্রে ব্যবহার করা নামটিই হুবহু ফেসবুক আইডির নাম হিসেবে ব্যবহার করার জন্য।
পাসওয়ার্ড
আইডির নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে শক্তিশালী পাসওয়ার্ড ব্যবহার করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কখনোই নিজের নাম, জন্মদিন বা ফোন নম্বর হুবহু পাসওয়ার্ড হিসেবে ব্যবহার করবেন না। এতে আপনার পাসওয়ার্ড আরেকজন খুব সহজেই অনুমান করে বের করতে পারে। ক্যাপিটাল লেটার, স্মল লেটার, নম্বর ও সিম্বল বা চিহ্ন সবগুলোর সংমিশ্রণের মাধ্যমে শক্তিশালী পাসওয়ার্ড ব্যবহার করুন।
যেমন—ahaYt75%+
মোবাইল নম্বর
অন্যের জাতীয় পরিচয়পত্র বা পাসপোর্ট দিয়ে নিবন্ধন করা সিমের নম্বর ফেসবুকে ব্যবহার করবেন না। শুধু আপনার নিজের বা নিকটাত্মীয়ের নামে নিবন্ধন করা সিমের নম্বর ফেসবুকে ব্যবহার করুন। পাশাপাশি অহেতুক ঝামেলা এড়াতে ফোন নম্বরের প্রাইভেসি ‘অনলি মি’ করে রাখুন।
ই-মেইল
শুধু মোবাইল নম্বর দিয়ে ফেসবুক অ্যাকাউন্ট চালানো গেলেও আইডির নিরাপত্তার ক্ষেত্রে ই-মেইল অ্যাড্রেস অ্যাড করা অপরিহার্য। কোনো কারণে আইডি হ্যাকড বা ডিজেবল হলে ই-মেইল অ্যাড্রেস যদি অ্যাড করা না থাকে, তাহলে পরে আইডি রিকভার করার সম্ভাবনা খুবই কম। ফেসবুক আইডিতে কখনোই অন্যের ই-মেইল অ্যাড করবেন না, শুধু আপনার নিজের সচল ই-মেইল অ্যাকাউন্ট অ্যাড করুন।
জন্ম তারিখ
ফেসবুক আইডির সুরক্ষার জন্য জন্ম তারিখ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। আইডি সুরক্ষিত রাখতে চাইলে আপনার জাতীয় পরিচয়পত্র বা পাসপোর্টে প্রদত্ত জন্মদিন ও জন্ম সাল এবং ফেসবুকে প্রদত্ত জন্মদিন ও জন্ম সাল হুবহু একই হতে হবে। কোনো কারণে আপনার ফেসবুক আইডি হ্যাকড বা ডিজেবল হলে রিকভার করার জন্য আইডি কার্ড সাবমিট করতে হয়। তখন আইডি কার্ডে দেওয়া জন্মদিন ও জন্ম সাল যদি ফেসবুকে প্রদত্ত জন্মদিন ও জন্ম সাল থেকে ভিন্ন হয়, আপনি কখনোই আইডিটি রিকভার করতে পারবেন না।
জন্ম তারিখ প্রাইভেট রাখুন
যদি সম্ভব হয় ফেসবুকে আপনার জন্ম তারিখটি প্রাইভেট বা ‘অনলি মি’ রাখুন। দেশে অনেক পেশাগত হ্যাকার রয়েছে, যারা কোনো ফেসবুক আইডির নাম ও জন্ম তারিখ ব্যবহার করে ছবি সম্পাদনার মাধ্যমে ভুয়া আইডি কার্ড বানিয়ে তা ফেসবুকে উপস্থাপন করে আইডি হ্যাক করার চেষ্টা করে। আপনার জন্ম তারিখ যদি লুকানো থাকে, তাহলে ওই সব হ্যাকার এই পদ্ধতি ব্যবহার করতেই পারবে না, নিরাপদ থাকবে আপনার ফেসবুক আইডিটি। তাই জন্ম তারিখ হাইড রাখুন, যদি জন্মদিন হাইড রাখতে আপত্তি থাকে সে ক্ষেত্রে অবশ্যই জন্ম সাল হাইড রাখুন।
টু ফ্যাক্টর অথেনটিকেশন
ফেসবুক অ্যাকাউন্ট নিরাপদ রাখার একটি অত্যন্ত কার্যকর পদ্ধতি হলো টু ফ্যাক্টর অথেনটিকেশন সিস্টেম। টু ফ্যাক্টর অথেনটিকেশন হলো দুই স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা, যেখানে সঠিক মেইল, মোবাইল নম্বর ও পাসওয়ার্ড দেওয়ার পরের ধাপে ব্যবহারকারীকে পুনরায় যাচাই করা হয়। ফেসবুকে কয়েক ধরনের টু ফ্যাক্টর অথেনটিকেশন সিস্টেম রয়েছে। আপনি যদি টু ফ্যাক্টর অথেনটিকেশন চালু রাখেন সে ক্ষেত্রে আইডিতে লগইন করার সময় ফেসবুক থেকে আপনার মোবাইল নম্বরে একটি কোড পাঠানো হবে।
এই কোড সাবমিট করা ছাড়া আপনি ফেসবুকে লগইন করতে পারবেন না। অর্থাৎ কেউ যদি কোনোভাবে আপনার ফেসবুক অ্যাকাউন্টের পাসওয়ার্ড জেনেও যায়, এর পরও সে লগইন করতে পারবে না আপনার মোবাইল নম্বরে পাঠানো কোডটি দেওয়া ছাড়া। ফলে আপনার আইডি নিরাপদ থাকবে।
এটি চালু করতে নিচের ধাপগুলো অনুসরণ করুন—
Facebook > Settings > Security > Security and login > Two-Factor Authentication > Use Two-Factor Authentication > Text Message
যোগ করুন বিশ্বস্ত আইডি
ফেসবুক অ্যাকাউন্টের নিরাপত্তার জন্য আপনার বিশ্বস্ত কয়েকটি আইডিকে ট্রাস্টেড কন্টাক্ট হিসেবে অ্যাড করে রাখতে পারেন। আপনার অ্যাকাউন্ট হ্যাক হলে বা কোনো কারণে লগইন করতে সমস্যায় পড়লে ট্রাস্টেড কন্টাক্ট ব্যবহার করে অ্যাকাউন্টটি রিকভার করতে পারবেন।
থার্ড পার্টি অ্যাপ ও ওয়েবসাইট
ফেসবুকে অনিরাপদ থার্ড পার্টি অ্যাপ ও গেম ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকুন। এসব আপনার ব্যক্তিগত তথ্য চুরি করে ফেলবে।
যে কোন বিষয়ে হ্যাল্প লাগলে আমাকে জানাবেন সর্বদা চেস্টা করব আপনাকে সাহায্য করবার ইনশাআল্লাহ। আমার সাথে যোগা যোগ করতে
ক্লিক করুন আমার
ফেসবুকে-
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
আপনার মন্তব্যর জন্য ধন্যবাদ