বিএনপির সঙ্গে জোট করে আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে আন্দোলন করায় শুধু রাজনৈতিক প্রতিহিংসা মিটাতে কথিত যুদ্ধাপরাধের বায়ুবীয় অভিযোগ তুলে জামায়াতের শীর্ষনেতাদেরকে বিচারের নামে নির্মমভাবে হত্যা করেছে শেখ হাসিনা। কোনো প্রকার সাক্ষ্য প্রমাণ ছাড়াই ক্ষমতার অপব্যবহার করে শুধু ক্যামেরা ট্রায়ালের মাধ্যমে বিচারের নামে একটা প্রহসন করেছে। বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় ইসলামী শক্তি জামায়াতে ইসলামীকে নিশ্চিহ্ন করার লক্ষ্যেই মূলত জামায়াতের নিরপরাধ নেতাদেরকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে।
কিন্তু, জামায়াতের শীর্ষনেতাদেরকে হত্যা করেও ক্ষ্যান্ত হয়নি শেখ হাসিনা। সারাদেশ থেকে জামায়াতকে নির্মুলের লক্ষ্যে এখন আবার ১০ হাজার ৭৮৯ জন রাজাকারের নামের তালিকা প্রকাশ করেছে এই প্রধানমন্ত্রী।
মজার বিষয় হলো-শেখ হাসিনার এই তালিকা প্রকাশের পরই থলের বিড়াল বেরিয়ে এসেছে। প্রকাশিত তালিকায় এখন পর্যন্ত যাদের পরিচয় পাওয়া গেছে তারা সবাই কোনো না কোনোভাবে আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিল। দীর্ঘদিন ধরে দলের ভেতর থাকা যেসব রাজাকারদেরকে ভুয়া সাটিফিকেট দিয়ে মুক্তিযোদ্ধা সাজানো হয়েছিল সেই সব লোকদের পরিচয় এখন জাতির সামনে উম্মোচিত হয়েছে।
রাজাকারের তালিকায় নিজেদের নাম দেখে অনেকেই এখন বলছে-আমরা যুগ যুগ ধরে আওয়ামী লীগের রাজনীতি করে আসছি। রাজাকারের তালিকায় আমাদের নাম থাকতে পারে না। কেউ কেউ আবার নিজেদেরকে বঙ্গবন্ধুর ঘনিষ্ট সহচর ছিল বলেও দাবি করছে।
সবচেয়ে লক্ষণীয় বিষয় হলো-প্রকাশিত রাজাকারের তালিকায় আওয়ামী লীগের বর্তমান অনেক সংসদ্যদের বাবার নামও রয়েছে। তালিকায় দেখা গেছে, চট্টগ্রামের রাউজানের আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য ফজলে করিম চৌধুরীর বাবা একেএম ফজলে কবির চৌধুরীর নামও আছে। রাজাকারের ছেলেই আওয়ামী লীগ থেকে বার বার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হচ্ছে।
জানা গেছে, শেখ হাসিনা ও তার দলের নেতাকর্মীরা যাদেরকে উঠতে বসতে রাজাকার বলে গালি দিচ্ছে, সেই জামায়াতের সমর্থক লোক রয়েছে মাত্র ৩৭ জন। ১১ হাজারের মধ্যে এই ৩৭ জন যেটা খুবই নগণ্য। অথচ এই দলটিকে কোনঠাসা করার জন্যই রাজাকারের তালিকা প্রকাশ করেছিল শেখ হাসিনা। কিন্তু ঘটনা ঘটলো সমপূর্ণ উল্টো। সাধারণ জনগণ হাস্যরস করে বলছে কেঁচো খুজতে বেরিয়ে এলো সাপ।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এই তালিকা প্রকাশের পর চরম বিব্রতকর অবস্থায় পড়েছে শেখ হাসিনা ও তার দলের নেতারা। মুক্তিযুদ্ধ বিষয়কমন্ত্রী মোজাম্মেল হকের ওপর চরম ক্ষুব্ধ হয়েছেন শেখ হাসিনা। নিজেদের মান-সম্মান রক্ষায় প্রকাশিত তালিকা প্রত্যাহারেরও ঘোষণা দিতে পারে সরকার।
এদিকে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়কমন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক দাবি করেছেন, এই তালিকা পাকিস্তানিরা করেছে। তিনি বলেন, আমরা নিজেরা কোনো তালিকা প্রস্তুত করিনি। সেখানে কার নাম আছে, আর কার নাম নেই সেটা আমরা বলতে পারব না।
মন্ত্রী এইসব কথা বলে শাক দিয়ে মাছ ঢাকার চেষ্টা করছে বলে মন্তব্য করেছেন রাজনৈতিক মহল। তারা বলছেন, মন্ত্রীর এই বক্তব্য ইঙ্গিত করে দ্বিতীয়বার সংস্কার করে বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের আবারও রাজাকারের তালিকায় যুক্ত করে আওয়ামী লীগ নেতাদের তালিকা থেকে বাদ দিবে।
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
আপনার মন্তব্যর জন্য ধন্যবাদ